সর্বশেষ
ইরান থেকে আবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ৩ জন নিহতের দাবি
সম্পূর্ণ নিউজ
প্রতীকী ছবি
৫ আগস্টের পরে সাভার মডেল থানা থেকে লুট হওয়া ১২টি অস্ত্র উদ্ধার হয়নি এখনও
ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট জীবন রক্ষার্থে পুলিশ পালিয়ে যাওয়ার পর কয়েকশ’লোক সাভার মডেল থানায় ঢুকে ব্যাপক লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। অস্ত্রাগার ভেঙে বেশকিছু আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, গ্রেনেডসহ মূল্যবান মালামাল লুটে নিয়ে যায়। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় থানা ভবনসহ কর্মকর্তাদের কার্যালয়। এরপর যৌথবাহিনীর সহায়তায় বেশকিছু অস্ত্র গুলি উদ্ধার করা হয়। তবে ১২টি অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা যায়নি।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ১২টি এখনও উদ্ধার হয়নি। যারমধ্যে রয়েছে- চীনা রাইফেল ১টি, এসএমজি ১টি, শটগান ১টি, গ্যাস গান ৬টি, পিস্তল ৩টি। এরমধ্যে ট্রাফিকের একটি পিস্তল রয়েছে।’
তবে অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় সেসব অস্ত্র দিয়ে ছিনতাই-ডাকাতি এমনকি খুনের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে সন্ত্রাসীরা। এই লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র যতদিন দুষ্কৃতিকারীদের কাছে থাকবে ততদিনই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা থাকবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, ‘৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে আমরা এখনও কাজ করে যাচ্ছি। তবে ধারনা করছি হয়তো লুটেরা অস্ত্র নিয়ে পুকুরে অথবা নদীতে ফেলে দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গণঅভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৫ আগস্ট দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা চালায় ছাত্র-জনতা। এই সুযোগে থানায় ঢুকে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা।
উল্লেখ্য, অস্ত্র উদ্ধারে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় যৌথ বাহিনীর অভিযান। অপরাধীদের কাছ থেকে ও পরিত্যক্ত অবস্থায় ও যৌথবাহিনীর কাছে অস্ত্র গুলি অনেকে জমা দিলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি সাভার মডেল থানার ১২টি অস্ত্র।
অন্যদিকে, সাভার মডেল থানার রাইটার মনিরুল ওরফে মনির মৃধার নিকট লুট হওয়া দুটি পিস্তল রয়েছে দাবি করে ‘আরোহী জিনিয়া’ নামে ফেসবুক পেইজে লাইভে এসে বলেন এক নারী। এমনকি রাইটার মনিরের ছবি পোষ্ট করে স্ট্যাটাস দিয়ে থানা থেকে লুট করা অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ঠদের অনুরোধ জানান। মনির পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার শশীদ এলাকার বাসিন্দা। ফেসবুক লাইভে আসা ওই নারীর বাড়িও একই জায়গায়। ওই অস্ত্র দিয়ে এলাকায় মানুষকে ভয়ভীতি দেখায় দাবী ওই নারীর।
তবে সাভার মডেল থানার রাইটার মনিরুল ওরফে মনির মৃধার নিকট মুঠফোনে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্ত্র লুটের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন।
ফেসবুকে থানার রাইটারের অস্ত্রলুটের বিষয়টি ভাইরালের বিষয়ে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং তদন্ত করছি।’
সেদিনের ঘটনা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, সোমবার, জনগণের আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপরেই উত্তেজিত জনতার ভয়ে থানা ছেড়ে পুলিশেরাও আত্মগোপনে যাওয়া শুরু করেন। তবে সেদিন সারাদিনই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে উপস্থিত পুলিশের থেমে থেমে সংঘর্ষ চলেছিল।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশ পালিয়ে যাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা থানায় ঢুকে ভাঙচুর করে। এরপর থানার ভেতরে থাকা যানবাহন ও থানা ভবনসহ পুলিশ ব্যারাক আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে লুটপাট।
তারা আরও জানান, সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যার পর কয়েক’শ তরুণ-তরুণী, নারী ও শিশু সাভার থানায় ঢুকে লুটপাট শুরু করে, যাদের সবাই অছাত্র এবং অপরিচিত।
পরদিন ৬ আগস্ট, সকালে সাভার থানায় গিয়ে অস্ত্রাগারে কয়েকটি পুরোনো অস্ত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখনও থানার ভেতরে আগুনের ধোঁয়া বের হচ্ছিল।
আত্মগোপনে থাকা সাভার থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘থানার অস্ত্রাগারের প্রায় সব অস্ত্র-গুলিসহ মালখানার আলামত এবং থানা ভবন ও আবাসিক ভবনের মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট সারাদেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আশেপাশের বিভিন্ন থানার অস্ত্র ও গোলাবারুদ সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছিলো। এছাড়াও বিভিন্ন সময় লুটকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে রাখা হয়েছিলো সাভার সেনানিবাসে। পরে গত ২৫ আগস্ট আবার তা নির্ধারিত থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীসহ সারাদেশে ৪৬০টি থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। নানান স্থাপনা থেকে লুট হয় ৫ হাজার ৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র। গোলাবারুদ লুট হয়েছে ৬ লাখ ৫১ হাজার ৮২৬ রাউন্ড। এছাড়া বিভিন্ন থানা ও কারাগার থেকে অনেক অপরাধীও পালিয়ে যায়, যাদের সবাইকে আজও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বলছে, গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৭৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫৬ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে। তবে এখনও ১ হাজার ৩৭৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা যায়নি।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, 'লুট হওয়া অস্ত্রগুলো কারও হাতে গেল অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সেজন্য উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। যতদিন পর্যন্ত অস্ত্রগুলো উদ্ধার হচ্ছে না ততদিন বিশেষ অভিযান চলবে।'
লুট হওয়া অস্ত্র সমাজের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। এসব অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে সমাজ বিজ্ঞানী মো. মাহবুব কায়সার বলেন, 'নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে আমরা আশঙ্কা করছি লুট হওয়া অস্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে খুবই সচেতন হতে পবে। যত তাড়াতাড়ি অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি রাষ্ট্র নিরাপত্তার মধ্যে আসবে।'
সাভার
অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে সাভারে তিতাস গ্যাস কর্তৃক সাঁড়াশি অভিযান, অর্থদণ্ড প্রদান
সাভার
৫ আগস্টের পরে সাভার মডেল থানা থেকে লুট হওয়া ১২টি অস্ত্র উদ্ধার হয়নি এখনও
সাভার
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আর কোনোদিন রাজনীতি করতে পারবে না : সাভারে আমানউল্লাহ আমান
সাভার
সাভারে ৩ মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়লেও ঈদযাত্রা স্বাভাবিক
সাভার
সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত
সাভার
ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত সাভারের ট্যানারি
সাভার
সাভারে দিনমজুর দুর্জয় শেখ হত্যা মামলার প্রধান আসামি লাবন গ্রেফতার
সাভার
সাভারে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্ৰেফতার ৭
সাভার
সাভারে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার ৩ আসামি গ্রেফতার
সাভার
সাভার পশুর হাটের ইজারা পেলেন আতিকুর রহমান রাজু