সর্বশেষ
ইরান থেকে আবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ৩ জন নিহতের দাবি
সম্পূর্ণ নিউজ
প্রতীকী ছবি
মা–বাবাদের জন্য খুশির বার্তা নিয়ে আসে কন্যা সন্তান
কন্যাসন্তান আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম উপহার। কোরআন-হাদিসে তাদের আল্লাহর রহমত ও সৌভাগ্যের প্রতীক বলা হয়েছে। তাদের অভিশাপ মনে করা জাহেলি যুগের প্রথা। সে যুগে লোকলজ্জার ভয়ে তাদের জীবন্ত দাফন করা হতো।
ইসলাম সেই কুসংস্কার রুখে দেয়। কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করাকে সুসংবাদ বলে অভিহিত করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন তাদের কাউকে কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়...।’ (সুরা নাহল: ৫৮)
কন্যাসন্তান সৌভাগ্যের প্রতীক। সাহাবি ওয়াসিলা বিন আসকা (রা.) বলেন, ‘কন্যাসন্তান মা-বাবার সৌভাগ্যের নিদর্শন। কারণ কোরআনে আল্লাহ তাআলা কন্যাসন্তান দেওয়ার কথা প্রথমে উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দেন। অথবা যাকে ইচ্ছা পুত্র-কন্যা উভয়টিই দেন এবং যাকে ইচ্ছা নিঃসন্তান রাখেন।’ (সুরা শুরা: ৫০-৫১; তাফসিরে কুরতুবি)
কন্যাসন্তান জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যাকে কন্যাসন্তান দেওয়া হয় এবং সে তাদের উত্তমভাবে লালন-পালন করে, তার জন্য তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় হবে।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
আরেকটি হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেন, 'যার একটি কন্যা সন্তান আছে এবং সে তার সাথে ভালো ব্যবহার করে, সে তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে ঢালস্বরূপ হবে।' (সুনান ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘যার তিনটি মেয়ে আছে এবং তাদের জন্য বিয়ে কিংবা মৃত্যু পর্যন্ত খরচ করে, তার জন্য তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ হবে।’ তখন এক নারী জিজ্ঞেস করলেন, ‘আর দুইটি থাকলে?’ তিনি বলেন, ‘দুইটি থাকলেও।’ (শুআবুল ইমান)
কন্যাসন্তান জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যার ঘরে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে, এরপর সে তাকে কষ্ট দেয়নি, মেয়ে হওয়ায় তার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেনি এবং পুত্রসন্তানকে তার ওপর প্রাধান্য দেয়নি, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (মুসনাদে আহমদ)
এটুকুই নয়, কন্যাসন্তানের সমাদর জান্নাতে মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভের মাধ্যম হবে বলেও হাদিসে এসেছে।
আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তির দুজন বোন বা কন্যা থাকে এবং সে তাদের প্রতি উত্তম আচরণ করে, বিয়ের সময় হলে উপযুক্ত ভালো পাত্রের কাছে বিবাহ দিল, সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ একসঙ্গে প্রবেশ করব—যেরূপ এ দুটি আঙুল। (তিনি তাঁর দুই আঙুল মিলিয়ে দেন)।' (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১২৫৯৩, তিরমিজি : ১৯১৪)
ইসলামের দৃষ্টিতে প্রথম কন্যাসন্তান প্রসবকারিণী নারী হলেন পুণ্যময়ী। পরম সৌভাগ্যবতী। বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা ওয়াসেলা ইবনে আসকা (রহ.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ সন্তানের প্রকার বর্ণনা প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম কন্যাসন্তানের কথা বলেছেন। এরপর বলেছেন পুত্রসন্তানের কথা। তাঁর শব্দচয়নের এ ধারাই প্রমাণ করে যে নারীর গর্ভ থেকে প্রথম কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, সে নারী পুণ্যময়ী।’ (তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন, খণ্ড: ৭, পৃষ্ঠা: ৭১২)